মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারী খাল ও সড়কের জায়গায় সম্প্রতি সময়ে গড়ে উঠছে শত শত অবৈধ স্থাপনা। সরকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে দখলবাজ ভূমিদস্যুরা বেপরোয়া সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে দখল-বানিজ্য। গত এক সপ্তাহ ধরে পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘূরে দেখা গেছে, সরকারী জায়গা দখলের মহোৎসবের চিত্র। প্রশাসনের বিনা বাধায় যে যার যার মতো দখল করছে সড়ক, নদী ও খাল-বিলের খাস জায়গা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়ক ও খালের সবচেয়ে বেশি জায়গা দখল হয়েছে মগনামা-পেকুয়া সড়কের পেকুয়া চৌমুহুনী থেকে পেকুয়া বাজার পর্যন্ত। চৌমুহুনী থেকে পেকুয়া বাজার পর্যন্ত একাধিক প্রভাবশালীরা খাল ও সড়কের দুই পাশ দখল করে ইচ্ছেমতো পাকা-আধা পাকা স্থাপনা তৈরী করে অবৈধভাবে ব্যবসা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। পেকুয়া ছৌমুহুনী থেকে পেকুয়া বাজারের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ে ¯্রােতম্বিনী কহল খাল দখলের মহোৎসব চলছে। পেকুয়া বাজারের বিএনপি অফিসের পূর্ব পার্শ্বে কহলখালী খাল পাড়ের জায়গা দখল করে দোকান ঘর তৈরী করেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। বিএনপি অফিসের পাশে খালের জায়গা দখল করে দোকানঘর তৈরী করায় কহল খালী খালের পানি চলাচলের তীব্র বাধার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে একটু বৃষ্টি হলেও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বৃষ্টি পানি জমে বন্যা সৃষ্টির উপক্রম হয়।
এছাড়া পেকুয়া বাজারের পূর্ব দিকে একটি ডেভেলাপমেন্ট কোম্পানি মগনামা-বানিয়ারছাড়া সড়কের অধিগ্রহণকৃত জায়গা দখল করে বহুতলা বানিজ্যিক ভবন তৈরীর কাজ সম্পন্ন করেছে। দীর্ঘদিন ধরে সওজের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা তৈরীল কাজ চললেও সড়ক বিভাগ দখলদারদের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে দখলবাজরা বেপরোয়া হয়ে সরকারী জায়গা দ্বিগুণ উৎসাহে দখল প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। এছাড়াও পেকুয়া বাজারের দুই পাশে সওজের জায়গা দখল করে শত শত অবৈধ স্থাপনা তৈরী করা হয়েছে অনেক আগেই। সড়ক বিভাগ মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও কাজে কাজ কিছুই হয়না।
পেকুয়া সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পেকুয়া বাজারে বিএনপি অফিসের সাথে লাগোয়া খাস জমি দখদারের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ মামলা হয়েছিল। তার আগের তহশিলদার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেকুয়ার এসিল্যান্ড অফিসে প্রেরণ করে। ওই প্রতিবেদনে পেকুয়া বিএনপির অফিসের পাশে সরকারী ১ নং খাস খতিয়ানের জায়গায় তৈরী করা দোকানঘরটি উচ্ছেদের আবেদন জানানো হয়েছিল।
সড়ক ও খালের জায়গা দখলের সাথে জড়িত পেকুয়া বাজারের জনৈক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সরকারী জায়গা দখলের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি জানান, বাজারের অনেক ব্যবসায়ী সরকারী জায়গায় দোকান ঘর তৈরী ব্যবসা করছে। সরকার যখণ চাইবে, দখণ তারা তাদের দোকানঘর ছেড়ে দিবে। এতে তাদের কোন আপত্তি থাকবেনা।
পেকুয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালমা ফেরদৌস জানান, খাস জমিতে তৈরীকরা পেকুয়া বিএনপি অফিসের পাশের অবৈধ স্থাপনাটি উচ্ছেদে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের কক্সবাজার জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়–য়া জানান, পেকুয়ায় সওজের জায়গা দখলদারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে সরকারী জায়গা উদ্ধারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন
পেকুয়া প্রতিনিধি
মোবাইল নং ০১৮১৯-০১৯১০৪
তাং২১-০৬-২০১৮
পাঠকের মতামত: